অতীতের অভিজ্ঞতা , বর্তমানের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তা গুলি বিভিন্ন শিক্ষাবিদদের সঙ্গে ব্যাপক আলাপ আলোচনার পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ করা হয়েছে । যা শিক্ষানীতিতে ব্যাপক ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে সাহায়ক হবে ।
নতুন শিক্ষানীতি ২১শতকের দক্ষতা, মানুষের মধ্য হলেস্টিক , ইন্টিগ্রেটেড এবং উচ্চ মানের শিক্ষার জন্য দিকনির্দেশনা করছে বলে আমি মনে করি ।
বিদ্যাভারাতী আন্তরিক ভাবে জনগণের কাছে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ কে স্বাগত জানায় । এর সঙ্গে বিশ্বাস করে যে এই শিক্ষানীতি জনগণের সাথে জড়িত । তাই জনগণের অংশ গ্রহণের সাথে এই শিক্ষানীতি সফলতা লাভ করবে ।
এই শিক্ষানীতির মূল পদক্ষেপ গুলি স্কুল শিক্ষার পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষামূলক কাঠামো (৫+৩+৩+৩+৪) অর্থাৎ প্রাক প্রাথমিক থেকে XII পর্যন্ত বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছে । শৈশবের যত্ন থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার ভিত্তিতে একটি ভিত্তিপ্রস্তর তৈরীর চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।
শিশুদের পুষ্টি সহ স্বসহয়তা , দক্ষতা এবং খেলাধুলার মাধ্যমে ১ কোটি শিশুকে ১০ লক্ষ আঙানাওয়ারিদের খাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে শিক্ষার মূল আওতায় আনার বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । শিশুকে বিদ্যালয় মুখী করবার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উভয় পদ্ধতিতে শিক্ষার প্রসার ঘটবে । আর্থসামাজিক ভাবে দুর্বল শ্রেণীর শিশুদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । সব শিশুর জন্য সম দক্ষতার কথা বলা হয়েছে । বিষয় সুমহের সরলীকরণ , বৈজ্ঞানিক স্বভাবের বিকাশ , ডিজিট্যাল সাক্ষ্যরতার বিকাশ এবং বহুভাষিক শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে মূল বিষয় গুলি মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। শিশুকে শুধু বর্তমানের জন্য নয় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তৈরী করার কথা বলা হয়েছে । এটিকে আরো সরল করার জন্য মূল্যায়নের নির্দেশিকা গুলি রূপান্তরের মাধ্যমে বহুমাত্রিকসহ সামগ্রিক অগ্রগতির প্রগতিপত্র যথেষ্ঠ উদ্ভাবনী ও আকর্ষণীয় করার কথা বলা হয়েছে ।
শিক্ষক শিক্ষার জন্য নতুন এবং বিস্তৃত পাঠ্যক্রমের কাঠামোটি খুব শীঘ্রই সামনে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস ।
উচ্চ শিক্ষায় প্রত্যাশিত ভাবে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে । একাধিক এন্ট্রি এবং প্রস্থান এই বিকল্পের সাথে ডিগ্রিরর আওতায় চার বছরের কোর্স আসতে চলেছে । একটি নিয়ামক সংস্থার দ্বারা ” হাল্কা ও আটো ” (Light & tight ) নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে । হায়ার এডুকেশন রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া সমস্ত উচ্চ শিক্ষা নিয়ন্ত্রণ করবে ।
একটি নতুন জাতীয় গবেষণা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সমস্ত অ্যাকাডেমিক গবেষণা কেন্দ্রগুলি নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । যারা ঐ কেন্দ্রগুলির গুণগত মানও নির্ণয় করবে ।
আমি মনে করি অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে , বর্তমানের চ্যালেঞ্জ গুলি গ্রহণ করে এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ভারতের নতুন শিক্ষানীতি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে তৈরী করা হয়েছে । এখন এই নতুন শিক্ষানীতি কতটা বাস্তবে কার্যকরী হয় সেটাই দেখার । ১৯৬৮ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির ব্যার্থ হয়েছিল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে । বিদ্যভারতী শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সকাল শিক্ষাবিদ , শিক্ষা প্রশাসক ও রাজ্য সরকার গুলির কাছে সানুগ্রহ আবেদন করছে, নতুন শিক্ষা নীতিকে বাস্তবায়িত করার জন্য এগিয়ে আসতে ।
কেন্দ্রীয় সরকারকে নতুন শিক্ষানীতি ,জাতীয় স্বার্থে সর্বাত্মক প্রয়াসের জন্য আমরা আবারও অভিনন্দন জানাচ্ছি ।